পর্ব – ২: ক্যান্সারে সঠিক হোমিওপ্যাথিক ওষুধ বেছে নেওয়ার কৌশল/(ডা. ইকবাল জিল্লুল মজিদ)
রোগ নয়, রোগীকেই বুঝতে হবে আগে হোমিওপ্যাথির শক্তি সেখানে, যেখানে অন্যান্য চিকিৎসা কেবল রোগকে দেখে, আর হোমিওপ্যাথি দেখে মানুষটিকে তার অনুভূতি, অভ্যাস, ব্যথার প্রকৃতি ও মানসিক প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে সঠিক ওষুধ নির্ধারণে এই সূক্ষ্ম বিশ্লেষণই রোগীকে আরাম ও আশ্বাস এনে দিতে পারে।
Clinical Case-Taking: ক্যান্সার কেস নেয়ার কৌশল – ধাপ ১: Totality of Symptoms বোঝা রোগীর শারীরিক ও মানসিক উপসর্গ একত্রে মূল্যায়ন করা“ The patient is more important than the disease” — Kent। ধাপ ২: PQRS লক্ষণ খোঁজা।Peculiar, Quality, Rare, Striking লক্ষণগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া। ধাপ ৩: Miasmatic Base চিহ্নিত করা।ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সাধারণত Syphilitic বা Combined Miasm সক্রিয় থাকে।রোগের গভীরতা বুঝে Antimiasmatic Remedy নির্বাচন।ধাপ ৪: Modalities ও Concomitants বিশ্লেষণ।কিসে ব্যথা বাড়ে বা কমে, কোন সময়ে উপসর্গ তীব্র হয়।কোন উপসর্গ অন্যের সঙ্গে চলে আসে। ধাপ ৫: Mental State মূল্যায়ন।ক্যান্সার রোগীর ভয়, একাকীত্ব, আত্মসম্মানবোধ ও মানসিক কষ্ট বিশেষভাবে বিবেচ্য।Repertorization ও Materia Medica মিলিয়ে ওষুধ নির্বাচন।
ধাপ পদ্ধতি টুলস:
১ বিশ্লেষণ Kent’s, Synthesis
২ রেপার্টোরাইজেশন RADAR, Hompath
৩ Materia Medica মিল Boericke, Phatak, Clarke
বাস্তবভিত্তিক কেস উদাহরণ :
রোগী: বাম স্তনে শক্ত গ্রন্থি, ব্যথা রাতে বাড়ে, চেপে রাখা কষ্ট, আত্মসম্মান প্রবল, অতীতে মানসিক আঘাত।
সম্ভাব্য ওষুধ: Carcinosin, Conium, Natrum mur
চূড়ান্ত নির্বাচন: Carcinosin 200
(Deep miasmatic + sensitive + repressed grief)
উল্লেখযোগ্য হোমিওপ্যাথিক ওষুধসমূহ (সমস্যাভিত্তিক):
সমস্যা সম্ভাব্য ওষুধ –
স্তনে শক্ত গ্রন্থি – Conium, Phytolacca, Asterias
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার – Hydrastis, Cadmium sulph
ক্ষয়, রক্তপাত – Kali ars, Cundurango
মৃত্যুভয়, ভয়াবহ চিন্তা – Arsenicum alb, Phosphorus
কেমো-পরবর্তী দুর্বলতা – Cadmium sulph, China
হাড়ে ব্যথা/অস্থি ক্যান্সার – Ruta, Symphytum
পরিশেষে ক্যান্সারের প্রতিরোধ নয়, রোগীকে সাহস দেওয়া হোক চিকিৎসার মূলনীতি।ক্যান্সার যেমন দেহের ব্যাধি, তেমনি মনেরও সংকট। হোমিওপ্যাথি সেই গভীর যন্ত্রণার ভিতরে প্রবেশ করে রোগীকে বোঝে ও সমর্থন দেয়। সঠিক ওষুধ তখন শুধুই শরীর নয়, আত্মাকেও আরাম দেয়।
পরবর্তী পর্বে থাকছে: “ক্যান্সারের ধরণ অনুযায়ী (যেমন স্তন, লিভার, প্রোস্টেট ইত্যাদি) ওষুধ পরিকল্পনা ও ক্লিনিক্যাল কৌশল। আসুন, রোগের নয়—রোগীর পাশে দাঁড়াই। হোমিওপ্যাথি হোক ক্যান্সার যুদ্ধে আপনার সাহসিক সঙ্গী।পরামর্শ নিন নির্ভরতার সঙ্গে।
সাক্ষাৎ ও পরামর্শের জন্য আগাম সময় নির্ধারণ করুন:
ইকবাল জিল্লুল মজিদ
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক
পরিচালক, কমিউনিটি হেলথ প্রোগ্রাম, রাডডা এমসিএইচ-এফপি সেন্টার।
ঠিকানা: মিরপুর-১২, ঢাকা-১২১৬
মোবাইল: ০১৯১২৪৪৬৭৩০ ০১৮৫১৩৬৮৩৫৩
সংগ্রহ – আমির হোসেন