সময়: নীরব সাক্ষী, চিরন্তন সত্য
– ইকবাল জিল্লুল মজিদ
প্রতিটি মানুষই এক অনির্দিষ্ট যাত্রায় এগিয়ে চলেছে—জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। এই যাত্রাপথে আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সঙ্গী এবং একাধারে সবচেয়ে কঠিন বিচারক হচ্ছে সময়।
সময় চলে যায়, কিন্তু তার ছাপ থেকে যায়
সময় এমন এক উপাদান, যা চোখে দেখা যায় না, কিন্তু এর প্রভাব প্রতিটি জীবনেই স্পষ্ট। সময় চলে যায় নিঃশব্দে, কিন্তু রেখে যায় স্মৃতি, সিদ্ধান্ত, কৃতকর্ম ও ফলাফল। আমরা কেউ সময়কে থামাতে পারি না, কিনতে পারি না, জমা রাখতে পারি না—শুধু বুদ্ধিমত্তা ও সচেতনতা দিয়ে একে ব্যবহার করতে পারি।
সময়ের প্রকৃতি—নিরপেক্ষ ও ন্যায্য
সময় কারো ধর্ম, বর্ণ, জাত বা ভাষা দেখে না। সময় ধনী–গরিব, বড়–ছোট, শিক্ষিত–অশিক্ষিত—সবাইকে সমভাবে স্পর্শ করে। যার জীবনে পরিকল্পনা নেই, সময় তার পেছনে পেছনে দৌড়ায় না। বরং যে ব্যক্তি সময়কে মূল্য দেয়, সময় তাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে দেয়।
সময়ের সদ্ব্যবহার: বিশ্বাস নির্বিশেষে একটি মানবিক শিক্ষা
সব ধর্ম, সব দার্শনিক শিক্ষা, এমনকি আধুনিক বিজ্ঞানের কথাও এক জায়গায় এসে মিলে যায়—সময় অপচয় নয়, সময়ের সদ্ব্যবহারই সাফল্যের চাবিকাঠি।
কেউ সময়কে দেখে জীবনের প্রস্তুতি হিসেবে,
কেউ সময়কে ভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ হিসেবে,
আবার কেউ সময়কে নেয় আত্মোপলব্ধি ও সেবার ক্ষেত্র হিসেবে।
এই ব্যাখ্যা যেকোনো ধর্মের হোক না কেন, সময়ের মূল বার্তা একটাই—জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ।
পরিশেষে
আমাদের জীবনে প্রতিদিনই একটি নতুন পৃষ্ঠা, একটি নতুন সুযোগ। সময় যেন একটি আয়না, যেখানে প্রতিদিন আমাদের কাজ, চিন্তা ও মনোভাব প্রতিফলিত হয়।
একদিন এই সময়ই আমাদের কাজের সাক্ষী হয়ে দাঁড়াবে—আমাদের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার সাক্ষর হিসেবে।
তাই আসুন,
সময়কে সম্মান করি,
ভালো কাজে ব্যয় করি,
মানুষ হিসেবে দায়িত্বশীল হই,
অন্যদেরও সময়ের গুরুত্ব বোঝাতে সাহায্য করি।
কারণ—সময় কখনো প্রতীক্ষা করে না, কিন্তু সময় ঠিকই বিচার করে।