তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে শ্বশুর-জামাই নিহত, চারজন গ্রেপ্তার
প্রতিনিধি
রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে শ্বশুর-জামাই নিহত হওয়ার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন—তারাগঞ্জ বাজারের মুচি রুপলাল দাস (৫৫) ও তাঁর ভাতিজি জামাই প্রদীপ লাল (৩৫)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—বুড়িরহাট এলাকার আক্তারুল ইসলাম (৪৫), রফিকুল ইসলাম (৩৩), রহিমাপুরের মিজানুর রহমান (২২) এবং সয়ার ইউনিয়নের ইবাদত হোসেন (২৭)।
নিহত রুপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করে রোববার দুপুরে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রাতেই পুলিশ ভিডিও ফুটেজ ও ছবি বিশ্লেষণ করে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম. এ. ফারুক। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিঠাপুকুরের ছরান বালুয়া এলাকা থেকে ভাতিজি জামাইকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যানে করে ফিরছিলেন রুপলাল। পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় প্রদীপের ব্যাগ তল্লাশি করে ‘স্পিড ক্যান’ নামের বোতল ও কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। বোতলের ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধ ছড়ালে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর উত্তেজিত জনতা রুপলাল ও প্রদীপকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যায় এবং লাঠি-সোটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে। এতে গুরুতর আহত হলে তাঁদের তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। চিকিৎসক রুপলালকে মৃত ঘোষণা করেন এবং প্রদীপকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে ভোর ৪টায় তাঁর মৃত্যু হয়।
রোববার সন্ধ্যায় রুপলালের লাশ বাড়িতে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ক্ষুব্ধ জনতা লাশ মহাসড়কে রেখে অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানার আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় স্থানীয়রা। ওসি এম. এ. ফারুক বলেন, “ঘটনার সময়কার ভিডিও ও তথ্য বিশ্লেষণ করে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কেউই পার পাবে না। গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”