শব্দে মোড়ানো আমি–
ইকবাল জিল্লুল মজিদ
লোকেরা ভাবে আমি লিখি
কারণ শব্দ দিয়ে আমি ছবি আঁকতে জানি।
কারণ আমি প্রকাশ করতে পারি -
যা তারা কল্পনাও করতে পারে না।
কেউ ভাবে, আমার কলমে শক্তি আছে,
কেউ ভাবে -
অভ্যেসের ফলে এমন হয়।
কিন্তু খুব কম মানুষ জানে—
আমি লিখি -
কারণ প্রতিদিন নিজের ভেতরে
আমি একটু একটু করে নিঃশেষ হই।
আমি লিখি-
কারণ কাঁদতে জানি না কারও সামনে।
আমি লিখি-
কারণ শক্ত দেখালেও,
ভিতরে আমি থরথর করি।
আমি লিখি-
কারণ শব্দগুলোই একমাত্র শোনে
আমার নিঃশব্দ আর্তি।
কেউ যদি জিজ্ঞেস করে!
“তুমি এত ভাবুক কেন?”
তাদের কী বলি?
ভাবনাই তো আমার শ্বাস!
এটাই তো আমাকে শিখিয়েছে হারিয়ে
গিয়েও ফিরে আসা।
রাত গভীর হলে,
যখন চারপাশ নিস্তব্ধ,
তখন আমি জেগে থাকি একা—
হাতে কলম, চোখে প্রশ্ন, মনে কষ্ট।
লেখার মাঝে আমি খুঁজি নিজেকে,
খুঁজি সেই মানুষটিকে,
যে দিনের আলোয় আত্মবিশ্বাসী,
আর রাতের আঁধারে নিঃসহায়।
আমি লিখি -
কারণ নিঃসঙ্গতাকে ভাষা দিতে পারি।
আমি লিখি না বাহবা পেতে,
আমি লিখি—
কারণ নিজেকে বোঝার জন্য আমার -
এই শব্দযাত্রা দরকার।
প্রতিটি বাক্য, প্রতিটি পঙ্ক্তি—
হয়তো কারও চোখে শুধু লেখা,
কিন্তু আমার কাছে এগুলো
একেকটি গভীর শ্বাস, একেকটি অশ্রু।
যদি কোনোদিন কেউ বলে—
“এই লেখাটা ঠিক আমার মনের কথা,”
তবে আমি জানি,
আমার নিঃশব্দ কান্না কেউ শুনেছে।
আমি নিজেকে লেখক বলি না,
আমি একজন অনুভাবুক।
আমার লেখার প্রতিটি অক্ষরে
একটি না-বলা যন্ত্রণা,
একটি বোবা হৃদয়চিৎকার লুকানো।
আমি বাঁচি শব্দে, গড়ি অস্তিত্ব—
লিখে, ভালোবেসে, ভেঙে পড়ে
আবার উঠে দাঁড়িয়ে।