জাগো মানুষ জাগো
মু. নজরুল ইসলাম তামিজী
তোমাদের গায়ে ঢালা শোষণের গ্লানি,
তারপরও কি লজ্জা হয় না?
যখন জনতা রক্তের ফোঁটায় মুখাবদ্ধ,
তখনও কি তোমাদের ঘুম ভাঙে না?
শুধু শাসক নয়, শাসকদের ছায়া—
যারা মানবতাকে গিলে খায়,
তারা কি কখনো অন্তরীণতা বুঝবে?
খুলে দাও চোখ, জাগো!
জন্মেছি শুধু লাশ দেখতে,
নাকি মুক্তির গান গাওয়ার জন্য!
তোমরা যারা দেশের জনতাকে বিক্রি করো,
তোমাদের পায়ের নিচে আরেকটি নদী বয়ে চলে,
রক্তের নদী, আর ঘৃণার সাগর!
তুমি কি শোনো না তার ঢেউয়ের কোলাহল?
একটা লাশের বুকে নৃত্য করে যারা,
তাদের অভিশাপে পুরো সমাজ রুদ্ধ,
আজকে এই মাটি শুধু কাঁদছে,
তাদের হত্যার চিহ্ন স্পষ্ট হয়ে ওঠে,
আজ পাথরে লেখা থাকবে—
বিপ্লবের কন্ঠস্বর, ক্ষুধার শেষ চিৎকার!
তোমরা যারা তোমাদের পদমর্যাদার জন্য
দ্বারভাঙা পুরাণে নাচো,
তোমরা জানো না এই মাটি,
এই মাটি গড়বে নতুন এক পৃথিবী,
এ পৃথিবী থেকে একদিন তোমাদের মৃত্যু হবে,
কারণ তোমরা যতটুকু ক্ষয়,
ততটুকু অবধি আমরা জ্বলবো!
জ্বলবো আগুন হয়ে, জ্বলবো শিখার মত!
ভেঙে ফেলো ভন্ড প্রতীক,
এখন তোমরা বুঝবে—শোষণকারীদের জায়গা
শুধু পাপের তলদেশ,
শুধু বিভ্রান্তির দলিল!
যতটুকু পুড়বে, ততটুকু আলোর জন্ম হবে,
আমরা সবাই এক হয়ে ছড়াবো পৃথিবীজুড়ে,
রক্তের মুক্তি, আমাদের মুখে গগনচুম্বী।
যাদের আত্মত্যাগে এই মাটি দাঁড়িয়ে আছে,
তাদের অনন্ত চিৎকার আজও বাজছে,
তাদের সাহস, তাদের প্রতিরোধ—
কখনও থামবে না!
তারা মৃত নয়, তারা চিরকাল বাঁচবে,
তাদের উদাহরণে, আমরা আজো লড়ছি।
কিন্তু আমরা জানি—
যতদূর পর্যন্ত যেতে হবে,
ততদূর পর্যন্ত লড়াই করতে হবে,
তবু চল, সবাই এক হয়ে উঠো,
সবাই এক সুরে বলো—
এক নতুন সূর্য আসবে,
শোষিত জনগণের হাতে সোনালী রোশনাই।
তোমাদের কাছে এখন আর কিছু নেই,
শুধু ইতিহাসের দগ্ধ পৃষ্ঠা,
তোমরা যারা গণতন্ত্রের নামে
অন্ধকার সৃষ্টি করেছিলে—
আজ তারা সবাই গ্যালারির ধুলে,
আর আমরা যাঁরা দাঁড়িয়ে আছি,
তারাই নতুন পৃথিবী।
জাগো মানুষ, জাগো!
তোমরা যার জন্য বেঁচে আছো,
তার জন্য, আজ সমস্ত বাধা ভাঙো!
জীবনের অগ্নিপথে,
তোমরা হয়ে উঠো, এক নতুন ইতিহাসের অংশ,
কেবল মুক্তি আর স্বাধীনতা নয়,
এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখো!